নির্যাতনের মুখে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে যাদের নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে তাদের জন্য ৩ মিলিয়ন ইউরো সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান কমিশন ডেলিগেশন প্রধানের দূতাবাস ভবনে এক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রবিষয়ক কমিশনার ইয়ালভা জোহানসন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মিয়ানমারের সেনাদের অভিযানের মুখে প্রাণে বাঁচতে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেয়। তাদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংস অভিযানের সময়ে পালিয়ে এসেছিলেন।
শরণার্থীদের চাপ কমাতে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার। এর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ১৭ দফায় উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন আশ্রয়শিবির থেকে মোট ৩২ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ভাসানচরের আশ্রয়শিবিরে স্থানান্তর করা হয়।
রোহিঙ্গাদের ঢল নামার পর থেকে বিভিন্ন দেশ থেকে তাদের জন্য সহায়তা করা হয়। এরই অংশ হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য ৩ মিলিয়ন ইউরো দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
দুই দিনের সফরে বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কমিশনার ইয়ালভা জোহানসন। আগামীকাল শুক্রবার পর্যন্ত তিনি ঢাকায় থাকবেন।
পরে ইইউ’র পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তার বিষয়টি উল্লেখ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় ৩ (তিন) মিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেবে, এটা শুনে আমরা খুশি হয়েছি। কক্সবাজারেও রোহিঙ্গাদের তারা সহায়তা করেছে। বাংলাদেশ সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারে যখন সংঘাত শুরু হয় তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সীমান্ত খুলে দিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়ার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যদি বাংলাদেশের মানুষ খেতে পায়, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সেই খাবার ভাগাভাগি করে খাব। সেজন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে মানবতার জননী উপাধি দিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।’
এনামুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের সব ধরনের মানবিক সহায়তা নিশ্চিতের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে সহিংসতা ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।’
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের পুষ্টির বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। প্রথম দিকে যে পুষ্টি পরিস্থিতি ছিল, এখন কক্সবাজার ও ভাসানচরে সেই অবস্থা থেকে অনেক উন্নতি হয়েছে।
পাঠকের মতামত